Monday, October 14, 2013

৬০ সেকেন্ডেই আয়ত্ত করুন স্বাস্থ্যকর ক'টি অভ্যাস

সুস্বাস্থ্য নিয়ে ভাবছেন? সুস্বাস্থ্যের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয় না। একটু নিয়ম মেনে চললেই হয়। খাবার আগে হাত ধুয়ে নেওয়া। সমস্ত দিনজুড়ে আপনার খারাপ ও ভালো অভ্যাসগুলোর তালিকা করে ফেলুন। জীবন থেকে মুছে ফেলুন খারাপ অভ্যাসগুলো। স্বাস্থ্য অনুশীলন এখন মাত্র ৬০ সেকেন্ড এর ব্যাপার। আপনি চাইলেই পাল্টে দিতে পারেন আপনাকে। মাত্র ৮টি স্বাস্থ্য অনুশীলনই পাল্টে দিতে পারে আপনার স্বাস্থ্য। অর্জন করতে পারেন সুস্বাস্থ্য। যাপন করতে পারেন কাঙ্ক্ষিত জীবন। তবে জেনে নেই ৮টি স্বাস্থ্য অনুশীলন:


জুতাটি দরজার বাইরে খুলে রাখুন: সারাদিনের কাজ শেষে বাড়িতে ফেরার সময়ে যখন ক্লান্ত আপনি দরজার সামনে তখন মাত্র কয়েক সেকেন্ড আরও একটু বেশি খরচ করুন, আপনার জুতা দরজার বাইরে খুলে রাখার জন্য। কারণ আপনার এই জুতায় বহন করছে সারাদিনের যাবতীয় ধূলা-ময়লা, কেমিক্যাল, এলার্জি উৎপাদক দ্রবাদি ও নোংরা কাদা-মাটি যা আপনাকে সহ আপনার পরিবারের সবাইকে বিপদের মুখোমুখি করবে। আর তাই দরজায় মাত্র কয়েক সেকেন্ড খরচ করুন জুতা খুলে রাখার জন্য। তাতে করে আপনার ঘর থাকবে মুক্ত, বিভিন্ন রোগ-জীবাণু থেকে।

হাঁচি দেওয়ার সময়: আমরা এখানে সেখানে যখন-তখন হাঁচি দিয়ে থাকি। আমাদের কাছে যদি টিসু, রুমাল অথবা তোয়ালে না থাকে আর তখনই হাঁচি দেওয়ার পরে বেশিরভাগ সময় ব্যবহার করে থাকি হাত অথবা শার্টের কাপড়। কিন্তু এটা কতটা নিরাপদ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য, একবারও ভেবেছেন কি? হাত অথবা শার্টের কাপড়ে স্বভাবতই প্রচুর ময়লা জড়িয়ে থাকে। আর আমরা যখন এগুলো ব্যবহার করি তখন আমাদের মুখে-নাক আরও বেশি ময়লা হয়। যা আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। আর এই হাঁচি থেকে শুধুমাত্র যে নিজের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয় বিষয়টি তা নয়, এই হাঁচি ছড়িয়ে পড়ে বাতাসে- ক্ষতিগ্রস্ত করে গোটা পরিবেশ। আর তাই হাঁচি দেওয়ার সময়ে অল্প কয়েক সেকেন্ড সচেতন থাকায় আপনিসহ সকলের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত হতে পারে।

কাজের ফাঁকে চোখের অবসর: আজকাল অফিসগুলোতে কর্মীরা অথবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীরা অতি মনযোগ দিতে গিয়ে ল্যাপটপ ও কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে নিবিড়ভাবে তাকিয়ে থাকে। কাজের মধ্যে ডুবে গিয়ে ভুলে যায় নিজের স্বাস্থ্যের কথা। তাদের এই নিবিড়ভাবে তাকিয়ে থাকাতে তৈরি হয় চোখের সমস্যা অথবা মাথা ব্যাথা। এই চোখের সমস্যার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে দরকার হয় কিছুটা চোখের অবসর। চোখ বিশেষজ্ঞরা এই বিষয় একটা নিয়মও তৈরি করে ফেলেছেন ইতিমধ্যে নাম দিয়েছেন ২০-২০-২০ রুল। নিয়মে বলা হয়েছে, ২০ মিনিট যদি আপনি স্ক্রিনে চোখ রাখার পড়ে ঠিক ২০ মিনিটের মাথায় ২০ সেকেন্ডের একটা অবসর দরকার হয় চোখের। আর তার জন্য আপনাকে ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার স্ক্রিণ থেকে ২০ ফিট দূরের কোন বস্তুর দিকে ২০ সেকেন্ডের জন্য দৃষ্টি রাখতে হবে। চোখকে স্বস্তি দিয়ে দৃষ্টিকে অন্য কোনোকিছুর দিকে ফোকাস করতে হবে। তারপর আবার কাজে ফিরে আসা যেতে পারে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে, দুই হাত ছড়িয়ে শরীরটাকে একটু ঝাঁকুনি দিয়ে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করে নিলে। এভাবেই আপনি আপনার চোখের যত্ন নিতে পারেন। নিজেকে মুক্ত রাখতে পারেন ভবিষ্যতের ভয়াবহ কোন চোখের সমস্যা থেকে।

সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত থাকা: নিজেকে সব সময়ে সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত রাখার ব্যপারে খেয়াল রাখা উচিত সবার। তাতে করে আপনার ত্বক থাকবে সুরক্ষিত সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে। শুধুমাত্র তক্বের যত্নে নয়, এ্যাজাইন এবং স্কিন ক্যানসারের থেকেও মুক্তি পাওয়া উপায় হলো সূর্যের প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা। আর তাই বৃষ্টির দিন হোক আর রৌদ্র উজ্জ্বল দিনইবা হোক প্রতিদিনিই ব্যবহার করা উচিত ছাতা। আর এইভাবে আপনি আপনার ত্বক নিরাপদ রাখতে পারবেন দীর্ঘদিন।

প্রচুর পানি পান করুন প্রতিদিন: কমপক্ষে প্রতিদিন ৮ গ্লাস পানি পান করা আমাদের জন্য নির্ধারিত। ৮ গ্লাসের বাইরে যত পানি পান করা যায় কোন সমস্যা নেই। মনে রাখা উচিত আমাদের শরীরের ৬০ ভাগই হলো পানি। আর এই পানি আমাদের শরীরকে বিভিন্নভাবে উপকৃত করে থাকে। এটা আমাদের হজম ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, রক্ত চলাচলে সহায়তা করে, খাদ্য চলাচলে সহায়তা করে এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। আপনি যদি পর্যাপ্ত পানি পান না করেন; তবে কোষ্ঠকাঠিণ্য রোগের মতো আর বিভিন্ন রোগের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আর তাই সব সময় মনে রাখতে হবে প্রচুর পানি পান করা খুবই জরুরি। এই জন্যই প্রতিদিন কয়েক সেকেন্ড একটু বেশি খরচ করুন পানি পানের বিষয়ে। একটা বিষয়ে নিশ্চিত জেনে রাখুন, পানির কোন বিপল্প নেই।

রান্নাঘর রাখুন সুরক্ষিত: সাধারণভাবে আমরা টয়লেটকেই ভাবি রোগ উৎপাদনকারী জায়গা। নোংরা ময়লা জায়গা। ভেবে থাকি টয়লেট থেকেই জন্ম হয় বিভিন্ন রোগের; কিন্তু সরেজমিন বলে অন্যকথা: রান্নাঘর রোগ উৎপাদনে এখন বেশ সক্রিয়। রান্নঘরে প্রতিদিন অথবা প্রতিবেলাই রান্না করা হয়। আর এই রান্না করতে গিয়ে বিভিন্ন উপাদান যেমন শাক-সবজি, তরকারি, মাছ-মাংস এবং বিভিন্ন ধরণের মশলার উপকরণের বর্জ্য অংশটুকু জমা হয় রান্নাঘরে। আর এই বর্জ্য থেকেই তৈরি হয় বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া। আর এই ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়ে সমস্ত ঘরে। সৃষ্টি হয় বিভিন্ন ধরনের রোগের। আর তাই প্রতিদিন রান্না শেষে ৪৫ সেকেন্ড সময় খরচ করে আপনার রান্নাঘরটি পরিষ্কার করে নিতে পারলে, মুক্ত থাকতে পারবেন অনেক রোগের হাত থেকে। জীবন হবে সুস্বাস্থ্যময়। অনেক বেশি উজ্জ্বল ও নির্মল।

No comments:

Post a Comment